Saturday, March 24, 2007

নিঃশব্দ (nishabd)-২০০৭


দুধের স্বাদ ঘোলে মেটে না এইটা বেশ বুঝতে পারলাম তথাকথিত ইনডিয়ান লোলিটা নিঃশব্দ দেখে। দুধের স্বাদ দুধে, ঘোলের স্বাদ ঘোলেই মেটাতে হয়। প্রথম যখন শুনেছিলাম রামগোপাল ভার্মা একটা সিনেমা তৈরি করছেন যা নাকি সামথিং লাইক লোলিটা হবে, তখনই মনে প্রশ্ন উঠেছিল, ইজ ইট পসিবল ইন ইনডিয়া? তাছাড়া ভূতের সিনেমা করে বিখ্যাত হওয়া রামগোপাল লোলিটার মতো বাঘা আইডিয়া নিয়ে সিরিয়াস কাজ করবেন কেমন করে?
লোলিটা বোধহয় সাহিত্যের সবচেয়ে বিখ্যাত চরিত্র। এর গল্পটাও বাঘা সাহিত্যিকের,ভ্লাদিমির নবোকভের। এরকম প্যাশনদার গল্প খুব কমই আছে। তদুপরি ইনসেসটাস অবৈধ সম্পর্কের কথা। এ জিনিস নিয়ে সেই চল্লিশের দশক থেকে বিতর্ক চলছে তো চলছেই। আমার ভাগ্য ভাল, প্রথ ম দফা স্টানলি কুব্রিকের লোলিটাই দেখেছিলাম। আরও ভাগ্য যে, সে সিনেমার চিত্রনাট্য তৈরি করেছিলেন স্বয়ং ভ্লাদিমির নবোকভ। সিনেমাটি সাদাকালো। কিন্তু তাতে কি ১৯৬২ তে বানানো ওই ছবিটাতেই বাধভাঙা প্যাশনের অবৈধ রঙগুলো সবচেয়ে বেশি ফুটিতে তোলা গিয়েছিল।
এর পর দেখলাম ১৯৯৭তে আদ্রিয়ান লেইনের বানানো লোলিটা। সম্পূর্ণ রঙিন। তবে চিন্তা একটু কম । প্যাশনটা সরাসরি দেখানোর প্রবণতা বেশি।
এর মধ্যে সিনেমার ইতিহাসে লোলিটা নামে অনেক নায়িকা এসেছে। কখনো দৈবাৎ কখনো নবোকভের আইডিয়ার সাজেশন হিসাবে। মনে আছে, আদ্রিয়ান লেইনের মুভিটা দেখার পর একটা গল্প লিখেছিলাম ২০০৪-এ। লোলিতা রিলোডেড। সেও এক প্যাশনের গল্প।
বেশ এইসব মাথায় থাকলে নিঃশব্দ ভাল লাগার কথা না। সারাক্ষণ নীলের আধিপত্য দিয়ে রামগোপাল অবৈধ, বাধভাঙা ব্যাপারের সাজেশন হয়তো দিতে চেয়েছেন। কিন্তু ওই নির্জন পাহাড়ি এলাকায়ও ইনডিয়ান মূল্যবোধ সমাজ সংসার হাজির করে রীতিমতো একটা নীতিকথার আসর বসিয়ে ফেলেছেন। সৎ বাপ তো দূরের কথা বান্ধবীর বাপের সঙ্গে প্রেমটাও তাই জমলো না। বাধ যদি নাই ভাঙবে তবে আর খামাখা লোলিটাকে টেনে আনা কেন?
কিন্তু এইটুকুতেই ইনডিয়ান সমাজের মাথায় গরম পানি পড়েছে। বিতর্ক চলছে। অমিতাভ কি করে এই অভিনয় করে হানি ঘটালেন এ নিয়েও কথা বার্তার শেষ নেই। অনেকে এই বিতর্কের জোরে কিংবা বিজ্ঞাপনের জোরেও দেখছেন বটে। কিন্তু আমি হতাশ।
রামুজিসে বারে মে ফিরছে সোসনা পড়েগা!

No comments: