Tuesday, March 6, 2007

লুই মান্দোকির ভোসে ইনোসেনটে (২০০৪)


এক রাতে চ্যানেল ঘোরাতে ঘোরাতে হঠাত স্টার মুভিজে আঙ্গুল থেমে গেল। গভীর রাতে ইংরেজি ছড়া অন্যভাষার ফিল্মগুলো মোটামুটি বিজ্ঞাপনের ঝামেলা ছাড়াই দেখা যায়। কিন্তু একটা অসুবিধা হচ্ছিল। বিজ্ঞাপন বিরতি নেই তাই হয়তো সিনেমাটার নামও দেখা হলো না। কিন্তু বুঝতে পারছিলাম সিনেমাটা ভাল। নামে কি বা আসে যায়? ডিরেক্টিং স্টাইলও আমার পরিচিত না। অভিনেতা অভিনেত্রীদেরকেও চিনি না। ভাবলাম, পরে ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে নিশ্চয়ই জানা যাবে। সিনেমায় একটা চরিত্রের নাম ছিল চাভা। চাভার মার নাম কেলা। চাভা আর কেলা সার্চ দিয়ে পেয়ে গেলাম সিনেমার নাম ও ডিটেইল। স্পানিশ ভাষার এই সিনেমাটির ডিরেক্টর মেক্সিকান পরিচালক লুই মান্দোকি। মান্দোকির আরও কয়েকটি বিখ্যাত মুভির পরিচালক। মেসেজ ইন এ বোটল, হোয়েন এ ম্যান লাভস এ উওমেন তার মুভি। বলাবাহুল্য এইগুলা এখনও দেখা হয় নাই।
ভোসে ইনোসেনটে অর্থ ইনোসেন্ট ভয়েস।এটি তৈরি হয়েছে অস্কার টোরের শৈশবের অভিজ্ঞতার আলোকে। প্রেক্ষাপট ১৯৮০'র দশকের এল সালভাদর। সেখানকার শহরতলীর ১১ বছর বয়স্ক এক বাচ্চা চাভা। স্কুল ছাত্র। সিভিল ওয়ার চলছে। বাবা হারা পরিবারে চাভাই কর্তা। কাজ করে স্কুলে পড়ে। আর এমার্জেনসির মধ্যে যাপন করে দুঃসহ শৈশব। হঠাত গোলাগুলি। হঠাত আক্রমণ। স্কুলে আর্মি রেইড দিয়ে চাভার বয়সী ছেলের ধরে নিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে আর্মিতে ভর্তি করে। চাভার মূল সংগ্রাম হয়ে পড়ে যুদ্ধ এড়িয়ে নিজের শৈশবকে পাহারা দেয়া। এক সময় সকল কৌশল ব্যর্থহবার জোগাড় হয়। আর্মির হাত থেকে বেঁচে যাওয়া চাভা ও তার বন্ধুরা ভাবে, আর্মিতে যাওয়ার চেয়ে গেরিলা দলে যাওয়াই ভাল। গভীর রাতে গেরিলা ক্যাম্পে যায় তারা। ওই রাতেই রেইড হলে ধরা পড়ে। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে আকিস্মক গেরিলা আক্রমণে বেঁচে যায় চাভা। বাড়ি ফিরে দেখে পুরো গ্রাম পুড়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই মার সঙ্গে দেখা হয়। তিনি লুকিয়ে তাকে আমেরিকা পাঠাবার ব্যবস্থা করেন।
সিনেমাটিতে এল সালভাদরের বিপন্ন অবস্থা, মানুষের অসহায়ত্ব, চার্চের এক ফাদারের সঙ্গে গেরিলাদের সম্পর্ক, শৈশবের প্রেম এত সূচারুভাবে তুলে ধরা হয়েছে যে অবাক হতে হয়।
এই গৃহযুদ্ধ চলেছিল ১২ বছর।
কী অসহনীয় যে ওইসব গৃহযুদ্ধ!

No comments: